কোরআনের দৃষ্টিতে ইনফাক: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

WikiPasokh থেকে
("{{question}} পবিত্র কোরআনে ইনফাকের অবস্থান, তাৎপর্য ও এর কি প্রভাব রয়েছে? {{question end}} {{answer}} ইনফাক দ্বীনের অতি গুরুত্বপূর্ণ ও কেন্দ্রীয় ভিত্তিক বিষয়াদির মধ্যে অন্যতম এবং তা পবিত্র কো..." দিয়ে পাতা তৈরি)
 
৭৪ নং লাইন: ৭৪ নং লাইন:


== তথ্যসূত্র ==
== তথ্যসূত্র ==
[[fa: انفاق در قرآن]]
[[ur: انفاق قرآن کریم کی روشنی میں]]
[[en: Charity in the Qur'an]]
[[ms: Infak Dalam Al-Quran]]
[[ar: الإنفاق في القرآن]]

১০:০৮, ২১ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

প্রশ্ন

পবিত্র কোরআনে ইনফাকের অবস্থান, তাৎপর্য ও এর কি প্রভাব রয়েছে?


ইনফাক দ্বীনের অতি গুরুত্বপূর্ণ ও কেন্দ্রীয় ভিত্তিক বিষয়াদির মধ্যে অন্যতম এবং তা পবিত্র কোরআনে একাধিকবার উল্লিখিত হয়েছে। এবং এর জন্য সর্বোত্তম প্রতিদান নির্ধারণ করা হয়েছে। আত্মশুদ্ধি ও পবিত্রতা, নৈতিকতা অর্জন, উত্তম ও আধ্যাত্মিক মর্যাদা লাভ এবং সমাজ থেকে দারিদ্র্যতা বিমোচনে ইনফাকের বিশেষ প্রভাব রয়েছে।

পবিত্র কোরআনে ইনফাককারীগণ মুমিন, ধার্মিক ও নৈতিক গুণাবলীর মর্যাদা লাভ করেছেন। ইনফাক কারী বিশেষ গুন সম্পন্ন যেমন অদৃশ্যের প্রতি ঈমান, ধৈর্যশীল, নেককার ও নামাজ কায়েমকারী যা একজন মুসলমান হিসেবে তার অন্যতম বিশেষ গুন বলে বিবেচিত হয় এবং আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁদেরকে জান্নাতের সুউচ্চ মাকাম প্রদানে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছেন। কোরআনের বর্ণনা অনুসারে দরিদ্র, সুবিধা বঞ্চিত, ইয়াতিম, দুঃস্থ অসহায়দেরকে ইনফাক লাভের প্রাপ্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

ইনফাকের ফজিলত ও তাৎপর্য

ইনফাকের অর্থ হলো আল্লাহর রাস্তায় খরচ করা যা কিছু আল্লাহ আমাদেরকে প্রদান করেছেন।[১] ইনফাক যা অতি গুরুত্বপূর্ণ নৈতিক পরিচিতি ও মর্যাদাপূর্ণ জীবন যার প্রতি পবিত্র কোরআনে বিশেষ ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। মহান আল্লাহ ইনফাক কারীর জন্য উত্তম পুরস্কার ও জান্নাত নির্ধারণ করে রেখেছেন এবং উক্ত ব্যয়কৃত সম্পদকে কয়েক[২] গুন বৃদ্ধি করে দেন।[৩] ইনফাক কারীর জন্য কোন প্রকার দুঃখ কষ্ট নেই।[৪]

কোরআনে কারীমে, শতাধিক আয়াতে অভাবগ্রস্তকে সাহায্যের জন্য জাকাতের মাধ্যমে,খুমস,সাদকাহ, ইনফাক, উত্তম ঋণ (সুদবিহীন), খাদ্য প্রদান সহ অন্যান্য বিষয়ের প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। কোরআন ইনফাকের পন্থা ও পরিমাণ, ইনফাক কারীর প্রতি শর্তাবলী ও ইনফাক গ্ৰহণকারীর প্রতি ও যথাযথ নির্দেশনা দিয়েছে।[৫]

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন অসংখ্যবার কোরআনে ইনফাকের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন।[৬] কোন আয়াতে কড়া ভাষায় নিন্দনীয় স্বরে বলেছেন, যখন সবকিছুই আল্লাহর সাথে সম্পৃক্ত তাহলে কেন তোমরা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করছো না?[৭]

ইনফাকের দুইটি, আধ্যাত্মিক ও সামাজিক দিক রয়েছে। প্রথমত: মানুষকে আধ্যাত্মিকতার দিক থেকে উচ্চতর স্থানে পৌঁছে দেয়। দ্বিতীয়ত: অর্থনৈতিক অবস্থা প্রবৃদ্ধি ও সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা পালন করে। পবিত্র কোরআনে অসংখ্য আয়াতে উত্তম ও পরহেজগারীর বৈশিষ্ট্যের মধ্যে তাকে ইনফাককারী হিসেবে পরিচয় করানো হয়েছে। ইসলামের দুটি অন্যতম বৃহৎ ও বিশেষ স্তম্ভ "মানবাধিকার" ও "আল্লাহর অধিকার" এর প্রতি সচেতন হতে মানুষকে যা সবচেয়ে বেশি সহায়তা করে তা হলো ইনফাক।[৮] আল্লাহ তার পবিত্র কোরআনে বলেছেন' যা কিছুই ইনফাক (ব্যয়,দান) করো নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা তার উত্তম পুরষ্কার প্রদান করবেন।[৯] একটি আয়াতে ইনফাক কে ক্ষুদ্র একটি বীজের সাথে তুলনা করেছেন যার প্রতিফল স্বরুপ সাতশত বীজে পরিণত হয়।[১০] কোরআনের বিশেষজ্ঞরা ইনফাকের আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেছেন, যা কিছুই আল্লাহর রাস্তায় খরচ করা হয় তা একটি অত্যন্ত লাভজনক বিনিয়োগ। কেননা আল্লাহ তায়ালা তার পুরষ্কার প্রদানে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছেন।[১১]

তোমরা কখনোই মুমিনদের অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে না যতক্ষণ অবধি তোমাদের প্রিয় জিনিস আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় না করো।(সূরা আল-ইমরান ৯২)

আত্মশুদ্ধি

আত্মশুদ্ধি ও পবিত্রতা অর্জন ইনফাকের অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব। ﴾الَّذِي يُؤْتِي مَالَهُ يَتَزَكَّىٰ যে তার সম্পদ হতে দান করে নিজেকে পরিশুদ্ধ করার জন্য।﴿(লাইল:১৮) তাফসির কারকগণ আত্মশুদ্ধির ব্যাখায় বলেছেন, উক্ত আয়াতে ইয়াতাজাক্কাহর প্রকৃত অর্থ; সৎ উদ্দেশ্য ও আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। এছাড়াও আরেক অর্থে যেমন আধ্যাত্মিকতার স্তর বৃদ্ধি ও মর্যাদা লাভের ব্যাপারেও উল্লেখ করা হয়েছে। অথবা নিজের সম্পদের পবিত্রতা বজায় রাখার উদ্দেশ্যে। কেননা উক্ত আয়াতে তাজকিয়াহ "সম্পদ বৃদ্ধি" ও "সম্পদের পবিত্রতা" দুই অর্থেই এসেছে। ﴾خُذْ مِنْ أَمْوَالِهِمْ صَدَقَةً تُطَهِّرُهُمْ وَتُزَكِّيهِمْ بِهَا وَصَلِّ عَلَيْهِمْ ۖ إِنَّ صَلَاتَكَ سَكَنٌ لَهُمْ তুমি তাদের সম্পদ থেকে জাকাত গ্ৰহণ করো তাদেরকে পরিশুদ্ধ করার জন্য ও এর মাধ্যমে তাদের পবিত্র করার জন্য, এবং তাদের কল্যাণের জন্য দোয়া করো নিশ্চয়ই তোমার দোয়া তাদের জন্য প্রশান্তির।﴿(তাওবা:১১২)[১২]

কোরআনের বর্ণনা অনুসারে, ইনফাক যা গোনাহ মোচনের অন্যতম দিক বলে বিবেচিত হয়।[১৩] মানুষ ততক্ষণ পর্যন্ত মুমিন হতে পারেনা যতক্ষণ তার প্রিয় জিনিসকে ইনফাক না করে।[১৪] ইনফাক যার ফলে মানুষের পরিত্রাণের পথ সমৃদ্ধ হয় ও অন্তরের প্রতিবন্ধকতা দূর হয় এবং আত্মা প্রশস্ততা লাভ করে।[১৫]

শহীদ মোতা'হারী মানুষের পরিপূর্ণতা অর্জনে ইনফাকের উদ্ধৃতি ব্যবহার করে বলেছেন যে, একজন মানুষের যা কিছুই আছে তা থেকে দান করে যার ফলে সে আল্লাহর রহমতের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে এবং এটা একজন মানুষকে প্রকৃত ও পরিপূর্ণ মানুষ হতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।[১৬]

মাজমাউল বায়ান গ্ৰন্থের লেখক বলেছেন:

ইনফাককারী তার দানের মাধ্যমে আল্লাহর নিকট পবিত্রতা অর্জন করে এবং এর মাধ্যমে নিজের লোভ ও অহংকারকে দূরে ঠেলে দেয়।[১৭]

দারিদ্র্যতা দূরীকরণ

কোরআনের একটি বিস্তৃত পূর্ণ আলোচনা অর্থনীতির কর্তব্য সমূহের সাথে সম্পৃক্ত যার আলোচ্য বিষয় হলো ইনফাক। এই শব্দটি আশি বা ততর্ধ বার বিভিন্ন অর্থে এসেছে এবং মুসলমানদেরকে আল্লাহর একটি অংশ স্বরুপ তা হতে অন্যদের ইনফাক প্রদানের প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে।[১৮] ইসলামে ইনফাকের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো, সমাজ থেকে দারিদ্র্যতা দূর করা। বিভিন্ন প্রসিদ্ধ আলেমগণ বলেছেন, ইনফাকের সংস্কৃতি এটা প্রমাণ করে যে সমাজের প্রত্যেকেই একে অন্যের প্রতি খেয়াল রাখে এবং তাদের জৈবিক চাহিদা ও দৈনন্দিন জীবনের প্রতিও সমানভাবে চিন্তিত এবং সে অনুযায়ী দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখে। ইনফাকের সংস্কৃতি যেভাবে কোরআনে গুরুত্বসহকারে বর্ণিত হয়েছে ঠিক ততদরুপ হয় এবং তা সমাজে পরিপূর্ণ রূপে বাস্তবায়ন হয়। দারিদ্র্যতার মত জটিল সমস্যা যা মানুষের জন্য সমাজের অন্যতম একটি প্রতিবন্ধকতা তা অনেকাংশে উন্নতি লাভে সহায়ক হয় এবং হয়তো এর ফলে ধীরে ধীরে তা সম্পূর্ণরূপে নির্মূল হয়ে যাবে। বিশেষজ্ঞ আলিম বলেন, ইসলামের আরেকটি অন্যতম উদ্দেশ্য হল,অন্যায্যতার বিরোধ সৃষ্টি যা সমাজের ন্যায়সঙ্গতার অভাবে ধণী গরীববের মাঝে শ্রেণী বিভাজন তৈরি করে একে ধ্বংস করে দেয়। ইসলাম এজাতীয় উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিশেষ পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে যার মধ্যে অন্যতম হলো ইনফাক এবং সম্বলহীনের প্রতি আর্থিক সহায়তা প্রদান।[১৯]

অন্যকে সাহায্য করা এবং সমাজ হতে দারিদ্র্যতা দূরীর চেষ্টা করা সৎকর্ম সমূহের অন্যতম উদাহরণ যার প্রতি কোরআন বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করেছে।[২০] যারা স্বর্ণ-রৌপ্য জমা করে রাখে এবং আল্লাহর রাস্তায় ইনফাক করা থেকে বিরত থাকে, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাদেরকে অত্যন্ত কঠিন আজাব প্রদানের প্রতি ওয়াদা করেছেন। ইসলাম সম্পদ সঞ্চয় করে রাখা এবং দান না করার প্রতি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং যারা সম্পদ জমিয়ে রাখে তাদেরকে কঠোরভাবে নিন্দা করেছে।[২১]

ইনফাককারীর বৈশিষ্ট্য সমূহ

««মুমিন তারাই যারা তাদের কঠিন এবং সহজ উভয় পরিস্থিতিতেই দান করে ও নিজের রাগকে নিয়ন্ত্রন করে এবং মানুষের ক্রুটি ক্ষমা করে। আল্লাহ নৈতিক গুনসম্পন্নদের ভালোবাসেন।»»(সূরা আল-ইমরান ১৩৪)

কোরআনের বর্ণনা অনুসারে পরহেজগার[২২], নৈতিক[২৩] গুণাবলী সম্পন্ন[২৪], মুমিন, সত্যবাদী ইনফাককারীর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত এবং একইসাথে যারা অদৃশ্যের প্রতি ঈমান রাখে এবং নামাজ কায়েম করে।[২৫] কোরআন নৈতিক কাজসমূহের গণনায় ইনফাককে অন্যতম বলে উল্লেখ করেছে।[২৬] সূরা তাগাবুনের ষলোতম আয়াতে তাদেরকে সৌভাগ্যবান হিসেবে উল্লেখ করেছে এবং যারা নিজের সম্পদ ও নাফসের সাথে যুদ্ধ করে তাদেরকে নাজাত প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত করেছে।[২৭]

সূরা আল-ইমরানে এসেছে যারা নিজের কঠিন-খারাপ ও যেকোনো পরিস্থিতিতে দান করে আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে পছন্দ করেন।[২৮]

পরহেজগারীর বৈশিষ্ট্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো নিজের আয়ের একটি নির্ধারিত অংশ হতে দরিদ্র ও অসহায়দের দান করেন।[২৯] এবং বিনয়ীর বৈশিষ্ট্যের ক্ষেত্রে বলেছেন তারা অত্যন্ত ধৈর্যশীল ও নামাজ কায়েমকারী এবং যা কিছু তাদের রিজিক প্রদান করেছি তা হতে ইনফাক করে।[৩০]

পবিত্র কোরআনে মুমিনের গুণাবলীর ক্ষেত্রে বলা হয়েছে যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান রাখে এবং নিজের সম্পদ ও নাফসের সাথে আল্লাহর রাস্তায় সংগ্ৰাম করে। এবং তারা সত্যবাদীদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।[৩১] কোরআন ইনফাককে ঈমানের বিশেষ কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে উল্লেখ করেছে। ইনফাক এর গুরুত্ব ও বিশেষত্ব এবং যা কিছু দান করা হয়েছে তা ইসলামের মৌলিক বিষয়বস্তুর মধ্যে অন্যতম বলে উল্লেখ করা হয়েছে।[৩২]

ইনফাক গ্ৰহণে যোগ্য

পবিত্র কোরআন' অসহায়, দরিদ্র, সুবিধা বঞ্চিত, ইয়াতিম, অভাবগ্রস্তদের ইনফাক গ্ৰহণের জন্য যোগ্য বলে উল্লেখ করেছে। সাদকা হচ্ছে দরিদ্র ও মিসকীনদের জন্য এবং এতে নিয়োজিত কর্মচারীদের জন্য, আর যাদের অন্তর আকৃষ্ট করতে হয় তাদের জন্য, দাস মুক্ত করার ক্ষেত্রে, ঋণগ্রস্তদের মধ্যে, আল্লাহর রাস্তায় এবং মুসাফিরদের মধ্যে। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত, আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়।﴿(সূরা তাওবা:৬০)

পবিত্র কোরআনে ইনফাকের কিছু বিষয় যেমন জাকাত,খুমস, আর্থিক কাফফারা এবং মুক্তিপণকে ওয়াজিব করেছে এবং সাদকাহর ক্ষেত্রে যেমন ওয়াকফ,কারো জন্য বসতি স্থাপন, ওসিয়ত করা, ক্ষমা করাসহ কিছু বিষয়কে মুস্তাহাব হিসেবে উল্লেখ করেছে।[৩৩]

কিভাবে ইনফাক করতে হবে

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন প্রকাশ্যে অথবা গোপনে করা সকল প্রকার দানের জন্যই বিশেষভাবে পুরস্কৃত করবেন।[৩৪] কিন্তু গোপনে দান করাকেই যথোপযুক্ত ও উত্তম বলে মনে করেন।[৩৫]

বিশেষজ্ঞ আলিমরা বলেছেন গোপন এবং প্রকাশ্যে উভয় দানেরই অসংখ্য উপকার রয়েছে। প্রকাশ্যে দান মানুষকে ভালো কাজের প্রতি আকৃষ্ট করে এবং সমাজকে এ কাজের প্রতি উৎসাহিত করে। কিন্তু গোপনে দান করা রিয়া (লোক দেখানো),দয়া করা ও অসহায়কে হয়রানি হওয়া এবং অপমানবোধসহ এজাতীয় উদ্দেশ্য হতে দূরে রাখে এবং দানকারীর জন্য এর আধ্যাত্মিক ও আত্মিক প্রভাবসহ বিশেষ প্রশান্তি রয়েছে।[৩৬] পবিত্র কোরআনের বর্ণনা অনুযায়ী মানুষের আধ্যাত্মিকতার স্তর উন্নীত করাই ইনফাকের প্রকৃত উদ্দেশ্য হিসেবে গণ্য করা হয়। যা একাজের প্রকৃত অর্থবহ প্রদান করে তা হলো এর উদ্দেশ্য। যদি এমন ইনফাক যা শুধুমাত্র লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে হয় নিঃসন্দেহে তা অমূল্যহীন এবং অকার্যকর।[৩৭] যতক্ষণ পর্যন্ত ইনফাক একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে হয় এবং মানুষের মধ্যে নিজেকে শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের উদ্দেশ্যে না হয় তা নিশ্চিতভাবে একটি অন্যতম সৎকর্মের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।[৩৮] ইনফাক অবশ্যই একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে হওয়া উচিত এবং তা যেন উচ্চ মর্যাদার আকাঙ্ক্ষা[৩৯] ও নাফসের লালসায় আবৃত পূর্ণ না হয়।[৪০] ইনফাক যদি তাচ্ছিল্যতার সহিত হয় তার সমস্ত পুরষ্কার বিফলে পতিত হয়।[৪১] ইনফাক যদি অবহেলা পূর্ণ ও দয়া প্রদানের জন্য না হয়। তার পুরষ্কার আল্লাহর নিকট বিশেষভাবে সংরক্ষিত।[৪২]

তথ্যসূত্র

  1. বাহাউদ্দীন খোররামশাহী, তেহরান, দোস্তান, নাহিদ, ২০০১, ভলিউম ১, পৃ. ৩১৩ এর প্রচেষ্টায় মইনি, মোহসেন, "ইনফাক", এনসাইক্লোপিডিয়া অফ কোরান অ্যান্ড কোরান স্টাডিজ।
  2. সূরা হাদিদ, আয়াত ১১। সূরা আনফাল, আয়াত ৬০। সূরা তওবা, আয়াত ২১।
  3. সূরা বাকারা, আয়াত ২৬1। সূরা কাস, আয়াত ৫৪।
  4. সূরা বাকারা, আয়াত ২৭৪।
  5. কারাতি, মোহসেন, তাফসির নূর, তেহরান, কোরান থেকে পাঠের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, ২০০৮, ভলিউম ৯, পৃ. ৪৬১।
  6. সূরা বাকারা, আয়াত ১৯৫।
  7. সূরা হাদিদ, আয়াত ১০।
  8. তাবাতাবাই, মোহাম্মদ হোসাইন, আল-মিজান ফি তাফসির আল-কুরআন, অনুবাদ করেছেন: মোহাম্মদ বাগের মুসাভি হামদানী, কওম, ইসলামিক পাবলিকেশন্স অফিস, ১৩৭৪, খণ্ড ২, পৃ.৫৮৭।
  9. সূরা বাকারা, আয়াত ২৭২। সূরা ফাতির, আয়াত ২৯। সূরা সাবা, আয়াত ৩৯।
  10. সূরা বাকারা, আয়াত ২৬১। সোবহানী, জাফর, "কুরআনের সুন্দর দৃষ্টান্ত" জার্নাল অফ লেসনস ফ্রম স্কুল অফ ইসলাম, নং ৯ (৮০)।
  11. মাকারেম শিরাজী, নাসের, তাফসির আল-নাশোন, তেহরান, দার আল-কাতব আল-ইসলামিয়া, ১৩৭১, খণ্ড ১৮, পৃ. ১১৭।
  12. মাকারেম শিরাজী, নাসের, তাফসীর নুসুন, তেহরান, দার আল-কুতুব ইসলামিয়া, ১৩৭১, খণ্ড ২৭, পৃ.
  13. সূরা বাকারা, আয়াত ২৭১।
  14. সূরা আল-ইমরান, আয়াত ৯২.
  15. মিসবাহ ইয়াজদি, মোহাম্মদ তাকী, রাস্তাগরণ, কওম, ইমাম খোমেনী শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (রহ.), বেটা, খণ্ড ১, পৃ.৫৯।
  16. মোতাহারী, মোর্তেজা, রচনা সংগ্রহ, তেহরান, সদর, ২০১৩, খণ্ড ২৬, পৃ.১২৬
  17. তাবারসি, ফজল বিন হাসান, মাজমা আল-বায়ান, আহমদ বেহেশতী এবং অন্যান্য, তেহরান, ফারাহানী, বেটা, ২৭, পৃ.
  18. মনতাজেরি, হোসাইন আলী, ইসলাম দ্বীন ফিতরাত, তেহরান, সায়েহ, ১৩৮৫, খণ্ড ১, পৃ. ৫৭৪।
  19. মাকারেম শিরাজী, নাসের, তাফসির আল-নাশোন, তেহরান, দার আল-কাতব আল-ইসলামিয়া, ১৩৭১, খণ্ড ২, পৃ. ৩১৬।
  20. সূরা তওবা, আয়াত ৩৪।
  21. মনতাজেরি, হোসেন আলী, ইসলাম দ্বীন ফিতরাত, তেহরান, সায়েহ, ১৩৮৫, খণ্ড ১, পৃ. ৫৭৬.
  22. সূরা বাকারা, আয়াত ১৯৫।
  23. সূরা বাকারা, আয়াত ২৫৪।
  24. সূরা তাগাবান, আয়াত ১৬।
  25. সূরা বাকারা, আয়াত ৩।
  26. সূরা বাকারা, আয়াত ১৭৭।
  27. সূরা তওবা, আয়াত ২০।
  28. সূরা আল ইমরান, আয়াত ১৩৪।
  29. সূরা ধরিয়াত, আয়াত ১৯।
  30. সূরা হজ, আয়াত 34 এবং ৩৫।
  31. সূরা হাজরাত, আয়াত ১৫।
  32. "আয়াত ও হাদীসে দাতব্য ও দাতব্য", অধ্যাপক হোসেন আনসারিয়ানের অফিসের তথ্য ভিত্তি। পরিদর্শনের তারিখ: ১২ মে ১৪০২।
  33. তাবাতাবাই, মোহসেন, তাফসির আল-মিজান, মোহাম্মদ বাগের মুসাভি কর্তৃক অনুবাদ, কওম, ইসলামিক পাবলিকেশন্স অফিস, ১৩৭৪, খণ্ড ২, পৃ. ৫৮৭।
  34. সূরা বাকারা, আয়াত ২৮৪।
  35. সূরা বাকারা, আয়াত ২৭১।
  36. তাবাতাবাই, মোহাম্মদ হোসাইন, আল-মিজান ফি তাফসির আল-কুরআন, অনুবাদ করেছেন: মোহাম্মদ বাকের মুসাভি হামদানী, কওম, ইসলামিক প্রকাশনা অফিস, ১৩৭৪, খণ্ড ২, পৃ. ৬১০।
  37. লেখকের একটি দল, "ইনফাক", ইসলামিক এনসাইক্লোপিডিয়া, তেহরান, ইসলামিক এনসাইক্লোপিডিয়া কেন্দ্র, ১০, এন্ট্রির নীচে।
  38. মাদ্রাসি, মোহাম্মদ তাকী, ইবাদতের আইন, কওম, মহিবান আল-হুসাইন (সা.) প্রকাশনা, ১৩৮১, খণ্ড ১, পৃ. ৫২৩।
  39. সূরা বাকারা, আয়াত ৬৩৫। মোহসেনী, মোহাম্মদ আসিফ, ওফুগ আলা, কাবুল, রিসালাত, ১৩৯৬, খণ্ড ৩, পৃ. ১৯৬।
  40. মোতাহারী, মোর্তেজা, রচনা সংগ্রহ, তেহরান, সদর, ২০১৩, ভলিউম ২২, পৃ.১৮৭।
  41. মাকারেম শিরাজী, নাসের, তাফসির আল-নাশোন, তেহরান, দার আল-কাতব আল-ইসলামিয়া, ১৩৭১, খণ্ড ২, পৃ. ৩১৮।
  42. সূরা বাকারা, আয়াত ৬২৬।