trustworthy
১৫৯টি
সম্পাদনা
১৬ নং লাইন: | ১৬ নং লাইন: | ||
== অবস্থান ও গুরুত্ব == | == অবস্থান ও গুরুত্ব == | ||
ইসলামের আকীদাগত মূলনীতি অর্থাৎ [[তাওহীদ]] (আল্লাহর একত্ববাদ), [[নবুওয়াত]] এবং মাআদ বা [[কিয়ামতের]] প্রতি ঈমান ও আকীদা। এই তিনটি মূলনীতি ইসলাম ধর্মের ভিত্তি ও স্তম্ভ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, এমনভাবে যে, এই ধর্মে বর্ণিত হওয়া সবকিছুই মূলনীতিগুলোর একটির মাধ্যমে অথবা তিনটির মাধ্যমেই অর্থবহ হয়ে ওঠে। সুতরাং, ইসলাম ধর্মের ছায়াতলে আসা সমস্ত ব্যক্তিদের মধ্যে আকীদা-বিশ্বাসের ব্যাপারে অল্প-বিস্তর পার্থক্য পরিলক্ষিত হলেও এই মূলনীতির ক্ষেত্রে তারা সকলেই একমত। | ইসলামের আকীদাগত মূলনীতি অর্থাৎ [[তাওহীদ]] (আল্লাহর একত্ববাদ), [[নবুওয়াত]] এবং মাআদ বা [[কিয়ামতের]] প্রতি ঈমান ও আকীদা। এই তিনটি মূলনীতি ইসলাম ধর্মের ভিত্তি ও স্তম্ভ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, এমনভাবে যে, এই ধর্মে বর্ণিত হওয়া সবকিছুই মূলনীতিগুলোর একটির মাধ্যমে অথবা তিনটির মাধ্যমেই অর্থবহ হয়ে ওঠে। সুতরাং, ইসলাম ধর্মের ছায়াতলে আসা সমস্ত ব্যক্তিদের মধ্যে আকীদা-বিশ্বাসের ব্যাপারে অল্প-বিস্তর পার্থক্য পরিলক্ষিত হলেও এই মূলনীতির ক্ষেত্রে তারা সকলেই একমত।<ref> জামি'য়ে আয নেভেসান্দেগান, "ইসলাম", দায়েরাতুল মাআরিফে বোজুরগে ইসলামী, তেহরান, মারকায দায়েরাতুল মাআরিফে বোজুরগে ইসলামী, খ:৮, জিল মাদখাল।</ref> | ||
ইমামিয়া শিয়া কালামশাস্ত্রবিদগণে ধর্মের মূলনীতির সংখ্যা কয়টি এবং কোন কোন বিষয় এর অন্তর্ভূক্ত তা নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করেন। সবচেয়ে প্রসিদ্ধ মত হল এই যে, উসুলে দ্বীনের মধ্যে [[নামায]], [[রোযা]], মাআদ তথা কিয়ামত এই তিনটি বিষয় অন্তর্ভূক্ত। তবে, আদল ও ইমামতকেও মাযহাবের মূলনীতি হিসেবে যোগ করতে হবে। | ইমামিয়া শিয়া কালামশাস্ত্রবিদগণে ধর্মের মূলনীতির সংখ্যা কয়টি এবং কোন কোন বিষয় এর অন্তর্ভূক্ত তা নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করেন। সবচেয়ে প্রসিদ্ধ মত হল এই যে, উসুলে দ্বীনের মধ্যে [[নামায]], [[রোযা]], মাআদ তথা কিয়ামত এই তিনটি বিষয় অন্তর্ভূক্ত। তবে, আদল ও ইমামতকেও মাযহাবের মূলনীতি হিসেবে যোগ করতে হবে।<ref>গযাশতে, নাসের, "উসূল উদ-দীন", দানেশনামায়ে ইরান, তেহরান, মারকায দায়েরাতুল মাআরিফে বোজুরগে ইসলামী, খ:৪, জিল মাদখাল।</ref> এই মূল নীতিগুলির প্রতি অজ্ঞতা বা বিশ্বাসের অভাব ব্যক্তিকে ইসলাম থেকে খারিজ করে দেয়। একইভাবে, মাযহাবের মৌলিক নীতিগুলির প্রতি অজ্ঞতা বা বিশ্বাসের অভাব একজন ব্যক্তিকে শিয়া মাযহাব থেকে খারিজ তথা বহিষ্কার করে দেয়।<ref>জামি'য়ে আয মোহাক্কেকিন, "উসূল উদ-দীন", দানেশনামায়ে কালামে ইসলামী, পৃ:৫১।</ref> | ||
অধিকাংশ মুসলিম পণ্ডিত মনে করেন যে, উসুলে দ্বীনের ক্ষেত্রে তাক্বলীদ (অনুসরণ) করা জায়েয বা বৈধ নয়। উসুলে দ্বিনের ক্ষেত্রে মানুষকে অবশ্যই দলিল প্রমাণের মাধ্যমে বিশ্বাস অর্জন করতে হবে। । এই বিষয়টির উপর আলেমদের মধ্যে ইজমা তথা ঐক্যমতের দাবি করা হয়েছে। তবে, অন্য একদল যেমন আবু হানিফা, সুফিয়ান থুরী, আওযায়ী, মালিক, শাফেয়ী, আহমাদ ইবন হাম্বাল এবং আহলে হাদিসের অনুসারীরা মনে করেন যে, যদিও মৌলিক বিশ্বাসের ক্ষেত্রে যুক্তি-প্রমাণ থাকা ওয়াজীব তথা বাধ্যতামূলক এবং তা ত্যাগ করা পাপ হিসেবে গণ্য হয়, তবে তাক্বলীদ বা অনুকরণের ভিত্তিতে ঈমান গ্রহণযোগ্য। | অধিকাংশ মুসলিম পণ্ডিত মনে করেন যে, উসুলে দ্বীনের ক্ষেত্রে তাক্বলীদ (অনুসরণ) করা জায়েয বা বৈধ নয়। উসুলে দ্বিনের ক্ষেত্রে মানুষকে অবশ্যই দলিল প্রমাণের মাধ্যমে বিশ্বাস অর্জন করতে হবে। । এই বিষয়টির উপর আলেমদের মধ্যে ইজমা তথা ঐক্যমতের দাবি করা হয়েছে। তবে, অন্য একদল যেমন আবু হানিফা, সুফিয়ান থুরী, আওযায়ী, মালিক, শাফেয়ী, আহমাদ ইবন হাম্বাল এবং আহলে হাদিসের অনুসারীরা মনে করেন যে, যদিও মৌলিক বিশ্বাসের ক্ষেত্রে যুক্তি-প্রমাণ থাকা ওয়াজীব তথা বাধ্যতামূলক এবং তা ত্যাগ করা পাপ হিসেবে গণ্য হয়, তবে তাক্বলীদ বা অনুকরণের ভিত্তিতে ঈমান গ্রহণযোগ্য।<ref>জামি'য়ে আয মোহাক্কেকিন, "উসূল উদ-দীন", দানেশনামায়ে কালামে ইসলামী, পৃ:৫১।</ref> | ||
অনেক ধর্মীয় পণ্ডিতের মতে, ধর্মের মূলনীতি সমূহের প্রতি বিশ্বাস ছাড়া ব্যক্তির মুসলিম হওয়া সম্ভব নয় এবং এগুলির মধ্যে কোন একটা অস্বীকার করলে কাফির হিসেবে গণ্য এবং শাস্তির যোগ্য বিবেচিত হবেন। উক্ত পরিভাষাটির প্রবর্তকদের মতে, এই আকীদাগুলোকে উসুলে দ্বীন হিসেবে অভিহিত করার কারণ হচ্ছে হাদিস, ফিকহ এবং কুরআনের তাফসীরের মতো ধর্মীয় জ্ঞানের শাখাগুলো এই মূল নীতির উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। বলা হয় যে, ধর্ম হচ্ছে একটি শিকরড় বিশিষ্ট গাছের ন্যায়, আর উসুলে দ্বীন হচ্ছে ধর্মের শিকড়, যার অস্তিত্বের উপর নির্ভর করে গাছের জীবন। | অনেক ধর্মীয় পণ্ডিতের মতে, ধর্মের মূলনীতি সমূহের প্রতি বিশ্বাস ছাড়া ব্যক্তির মুসলিম হওয়া সম্ভব নয় এবং এগুলির মধ্যে কোন একটা অস্বীকার করলে কাফির হিসেবে গণ্য এবং শাস্তির যোগ্য বিবেচিত হবেন। উক্ত পরিভাষাটির প্রবর্তকদের মতে, এই আকীদাগুলোকে উসুলে দ্বীন হিসেবে অভিহিত করার কারণ হচ্ছে হাদিস, ফিকহ এবং কুরআনের তাফসীরের মতো ধর্মীয় জ্ঞানের শাখাগুলো এই মূল নীতির উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। বলা হয় যে, ধর্ম হচ্ছে একটি শিকরড় বিশিষ্ট গাছের ন্যায়, আর উসুলে দ্বীন হচ্ছে ধর্মের শিকড়, যার অস্তিত্বের উপর নির্ভর করে গাছের জীবন।<ref>গযাশতে, নাসের, "উসূল উদ-দীন", দানেশনামায়ে ইরান, তেহরান, মারকায দায়েরাতুল মাআরিফে বোজুরগে ইসলামী, খ:৪, জিল মাদখাল।</ref> | ||
== উসুলে দ্বীনের উদাহরণ == | == উসুলে দ্বীনের উদাহরণ == |